মিরাজুল কবীর টিটো: যশোরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি শুরু হবে আগামী বছরের ২২ জানুয়ারি। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম চলবে। জেলা ও উপজেলার কলেজে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ভর্তির ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানী জানান, নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত নিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকি স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বাইরের জেলায় এমপিওভুক্ত কলেজের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ২০০০ টাকা ও উপজেলার কলেজগুলোয় ১৫০০ টাকা। ননএমপিও কলেজের বাংলা ভার্সনে ৩০০০ টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪০০০ হাজার টাকা। উপজেলার কলেজে বাংলা ভার্সনে ২৫০০ টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩০০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি কলেজ পরিপত্র অনুযায়ী ফি নেবে। দরিদ্র, মেধাবী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উল্লিখিত ফি’র যতটুকু সম্ভব মওকুফ করবে। ভর্তি প্রক্রিয়ার আগেই বেসরকারি কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি ফিসহ মাসিক বেতন এবং অন্যান্য অন্যান্য যাতীয় খরচের তালিকা স্ব স্ব কলেজের নোটিশ বোর্ডে ও ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি’র অতিরিক্ত টাকা নেয়া যাবে না। সব ফি রশিদ দিয়ে নিতে হবে। শিক্ষা বোর্ড শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চয়নের সময় শিক্ষার্থী প্রতি ৩৮০ টাকা নিতে পারবে। এরমধ্যে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন ফি ১৩৫ টাকা, ক্রীড়া ফি ৫০ টাকা, রেঞ্জার ফি ১৫ টাকা রেডক্রিসেন্ট ফি ১৬ টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি ৭ টাকা, বিএনএনসিসি ফি ৫ টাকা, শিক্ষক কল্যাণ তহবিল ও অবসর সুবিধা ভাতা ফি ১০০ টাকা।
এদিকে, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রেডক্রিসেন্ট ফি’র ২৪ টাকা ও ক্রীড়া মঞ্জুরী ফি’র ৩০০ টাকা শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে। ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর শিক্ষা বোর্ডে বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করে কলেজে গ্রুপ ও বিষয় পরিবর্তন করতে পারবে। তবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে বিজ্ঞান গ্রুপে গ্রুপ পরিবর্তন কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অন্য গ্রুপে ভর্তির পর বিজ্ঞান গ্রুপে প্রত্যাবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো অবস্থাতেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থীর মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক ব্যতিত কারোর কাছে হস্তান্তর করতে পারবে না। এমনকি কোনো অজুহাতে এটি আটকে রাখতে পারবে না। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা জমাদানের সময় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে বোর্ড নির্ধারিত উল্লিখিত ফি’র বিবরণীর সাথে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক খাতওয়ারি গৃহীত অন্যান্য ফি’র বিবরণী আলাদাভাবে জমা দিতে হবে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয় ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আবেদন, যাচাইবাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তির সময় ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২৪ ডিসেম্বর খাতা পুনঃনিরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ওই সব শিক্ষার্থীর আবেদন গ্রহণ করা হবে ২৬ ডিসেম্বর। একই তারিখে কলেজ পরিবর্তন করতে পারবে। ৩১ ডিসেম্বর প্রথম নির্বাচিত শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীরা প্রথম নিশ্চয়ন না করলে প্রথম পর্যায়ে আবেদন বাতিল এবং ওইসব শিক্ষার্থী ১ থেকে ৮ জানুয়ারি পুনরায় ফি দিয়ে আবেদন করতে পারবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ ৯ ও ১০ জানুয়ারি। পছন্দ অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ ১২ জানুয়ারি। একই দিন দ্বিতীয় আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রথম নিশ্চয়ন না করলে দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন বাতিল এবং ওইসব শিক্ষার্থী ১৩ থেকে ১৪ জানুয়ারি পুনরায় ফিস দিয়ে আবেদন করতে পারবে। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ ১৬ জানুয়ারি। পছন্দ অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ ১৮ জানুয়ারি। একই দিন তৃতীয় আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানী বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একটি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। যশোর বোর্ডের আওতাধীন কলেজে এই নিয়ম মানতে হবে। যদি কোন কলেজ এই নিয়ম না মানে; তাহলে বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।