প্রতিদিন ডেস্ক
অরুণাচল রাজ্যে ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে দুই দেশ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, সীমান্তের পরিস্থিতি চীনকে ‘একতরফাভাবে পরিবর্তন’ করতে দিতে পারে না ভারত।
তিনি বলেছেন, চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ এক সীমান্ত এলাকায় নজিরবিহীন মাত্রায় সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে তার দেশ। কয়েকদিন আগে অরুণাচল প্রদেশের একটি বিরোধপূর্ণ সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর এ মন্তব্য করলেন জয়শঙ্কর। ভারতের দাবি, চীনা সেনারা অনধিকার প্রবেশের কারণে সেখানে ‘এনকাউন্টার’ শুরু হয়। অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের জানামতে সীমান্ত পরিস্থিতি যথারীতি স্থিতিশীল। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চীন ও ভারতের মধ্যে ৩৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরোধপূর্ণ সীমান্ত আছে। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নামের এই সীমান্ত দুর্বলভাবে চিহ্নিত করা। পার্বত্য অঞ্চলের বহু নদী, হ্রদ ও তুষার আবৃত পর্বতের কারণে এই ‘লাইন’ অনেক সময় পরিবর্তিত হয়ে যায়। তখন অনেক পয়েন্টেই বিশ্বের দুই বৃহত্তম সেনাবাহিনীর সেনারা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়। উত্তেজনার পারদ চড়তে চড়তে কখনো কখনো ছোটখাট খ যুদ্ধ বেধে যায়। ২০২০ সালে লাদাখ অঞ্চলের গালওয়ান উপত্যকায় এ ধরনের সমস্যা থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে বড় একটি লড়াই হয়েছিল। সবশেষ গত ৯ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্প কিছু সেনা সামান্য জখম হয়েছে। ভারত বলছে, চীনা সেনাদের অনুপ্রবেশের কারণে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। সংঘর্ষের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে এবং দুই পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। সোমবার ইন্ডিয়া টুডে কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, “আজ চীন সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের এমনভাবে মোতায়েন করা হয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। চীনের আগ্রাসন মোকাবেলায় এটি করা হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল) একতরফাভাবে পরিবর্তনের চেষ্টা রুখে দিতে আজ ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।” তবে জয়শঙ্করের এ বক্তব্য নিয়ে চীন এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। চীন-ভারত সীমান্তে সর্বসাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে গত সপ্তাহে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোরগোল হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদলগুলোর অবিলম্বে আলোচনা শুরুর দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা পার্লামেন্ট থেকে ওয়াকআউট করে। ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার চীনের হুমকির ব্যাপারে উদাসীন।