উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) একটি বহুজাতিক অলাভজনক ও বেসরকারি সংগঠন। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ সংগঠনটি। এটি একটি থিংকট্যাংক। বৈশ্বিক সংকট নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করেন এর গবেষকরা। তা ব্যবহার করেন পলিসিমেকার ও শিক্ষাবিদরা। নিজেদেরকে যুদ্ধবিরোধী কর্মকা-ে এবং বিশ্বকে অধিক শান্তিপূর্ণ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়নে তারা কাজ করছে বলে দাবি করে। এর সদর দফতর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে। সংগঠনটি অক্টোবর ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ সাল পর্যন্ত কী ঘটতে পারে বাংলাদেশে তার ওপর ভিত্তি করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
এতে তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের সমর্থকরা রাজপথের সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারেন। হামলা হতে পারে দলীয় অফিস ও প্রার্থীদের ওপর। সরকারের বিরোধিতায় আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে ইসলামপন্থি গ্রুপগুলো। নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির আশঙ্কায় সম্ভবত নির্বাচন বর্জন করবে বিরোধী দল। এর মধ্য দিয়ে তারা উগ্র হয়ে উঠতে পারে। আরও সহিংস কৌশল অবলম্বন করতে পারে। নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বিশৃংখল হলে হস্তক্ষেপ করতে পারে বিশেষ কোনো বাহিনী। এতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে অথবা পরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। জালিয়াতির বা বিতর্কিত নির্বাচন হলে তাতে তীব্র সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ হতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র (এবং পশ্চিমা অন্য দেশগুলো) যেহেতু নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে (এর মধ্যে থাকতে পারেন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা), তাই সরকার অধিক পরিমাণে ভারত ও চীনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহ নতুন করে দেখা দিতে পারে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সরকারের অস্ত্রবিরতি চুক্তির মর্যাদা অনিশ্চিত। বিদ্রোহী সশস্ত্র শক্তির বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে এই গ্রুপটির। পার্বত্য চট্টগ্রামে কথিত ভিত্তি আছে নতুন ইসলামপন্থি গ্রুপ জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া’র। তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। এতে আরও বলা হয়, পর্যবেক্ষণ করতে হবে নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকা-। এর মধ্যে আছে প্রচারণা ও ভোটগ্রহণ। এসবই সহিংসতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলো থেকেও অশান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ তার রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের তিনদেশীয় সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীলতায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতাকে উৎসাহিত করতে পারে।