• Thu. Dec 26th, 2024

Basic News24.com

আমরা সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ঠেলায় পড়ে যশোর বাঘারপাড়ার এমপি রণজিৎ সরে গেলেন নৌকায় সমর্থন

Bybasicnews

Jan 3, 2024

 স্টাফ রিপোর্টা

অবশেষে যশোরের বহুল আলোচিত এমপি রণজিৎ কুমার রায় দ্বাদশ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় টিকিট নৌকা প্রতীক নিয়ে ৩ মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাকাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার হলফনামা মতে ২৫ শতাংশ আয় বেড়েছে। তবে এর বাইরেও রয়েছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ। নামে-বেনামে এসব সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তার প্রতীক ছিল ঈগল। তিনিসহ প্রার্থীদের সম্পদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে দুদক-এমন খবর চাউর হয় সোমবার। অবস্থা বেগতিক বুঝে আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে গণমাধ্যম কর্মীদের মুঠোফোনে তিনি নৌকার প্রার্থী এনামুল হক বাবুলকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এরফলে নৌকার জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেল-এমনটিই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রনজিত কুমার রায় ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওই নির্বাচনে রনজিত কুমার রায় পেয়েছিলেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৫৮ ভোট।
এ নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ৯৭ হাজার ৫২০ ভোট। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রনজিত কুমার রায়। এ নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ৭৬ হাজার ৯৪২ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিজ দলের প্রার্থী অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাব। ওহাব কলস প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৬ হাজার ২৮০ ভোট।
সর্বশেষ, গত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী রনজিৎ কুমার রায় জয়লাভ করেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির টিএস আইয়ূব পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৯শ’ ১৯ ভোট।
এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের অ্যাডভোকেট জহুরুল হক, তৃণমূল বিএনপির লে. কর্নেল (অব:) এম শাব্বির আহমেদ সোনালী আঁশ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মন্ডল নোঙ্গর ও মিনার প্রতীক নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী।

নৌকার কোনো ব্যাক গিয়ার নেই-বিএনপির উদ্দেশ্যে মন্তব্য উত্তর সিটির মেয়র আতিকের

যশোরে নাশকতা মামলায় বিএনপির আরও ১৫ নেতাকর্মী আটক

কেশবপুরে নৌকার পক্ষে একাট্টা প্রবীণ নেতা ও তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা,প্রচার প্রচারণা তুঙ্গে

এদিকে, যশোর-৪ আসনে তিন বারের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের বার্ষিক আয় বেড়েছে ২৫ গুণ। ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। ২০২৩ সালে এ আয় ২৫ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ টাকা। আয়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তার স্ত্রী নিয়তি রানীও অর্জন করেছেন অঢেল সম্পদ। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা ২০০৮ ও ২০২৩ সালের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যশোরের বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলা এবং বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ গঠিত। টানা তিনবার সংসদ সদস্য থাকায় তার ভাগ্যবদল হয়েছে। তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ।

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা ২০০৮ ও ২০২৩ সালের হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, রণজিত কুমার রায়ের বর্তমান (২০২৩) বার্ষিক আয় ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ টাকা। যা ২০০৮ সালে ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এ অনুযায়ী তার আয় বেড়েছে ২৫ গুণ। তার স্ত্রীর বর্তমানে কোনো আয় নেই। আগেও ছিল না।

২০০৮ সালের হলফনামায় উল্লেখ করা হয় রণজিত কুমার রায়ের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছয় কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৮ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৮ সালের হলফনামায় রণজিত কুমার রায়ের স্ত্রী নিয়তি রানীর নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ছিল ৮৫ হাজার টাকা। যা বর্তমানে (২০২৩) সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৭৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৯৮ টাকা।

হলফনাম বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, রণজিত কুমার ২০০৮ সালে চার বিঘা কৃষি জমি পৈতৃক সূত্রে পেলেও বর্তমানে ১২ বিঘা জমির মালিক। স্ত্রীর নামে ২০০৮ সালে কোনো জমি বা বাড়ি না থাকলেও বর্তমানে তিনটি বাড়ি আছে। যার মূল্য হলফনামার তথ্য অনুযায়ী এক কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। একই সঙ্গে বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট হিসেবে ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করেছেন।

২০০৮ সালে রণজিত কুমার রায়ের কাছে এক লাখ টাকা নগদ থাকলেও বর্তমানে এক কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্যের স্ত্রীর কাছে ৭০ হাজার টাকা নগদ ছিল। বর্তমানে তার স্ত্রীর কাছে ৫১ লাখ ১৬ হাজার ৮৪০ টাকা আছে। পূর্বে ব্যাংকিং সঞ্চয় ডিপিএস হিসেবে কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে রণজিত রায় দম্পতির ২৭ লাখ ৩৮ হাজার ৪৯২টাকা আছে। তার কোন দায় দেনা নেই। হলফনামায় রণজিত কুমার রায় তার সন্তানদের তথ্য উল্লেখ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *