২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি সকালে শার্শা উপজেলার উলশী ইউনিয়নের ধলদা বড়বাড়িয়ার একটি খাল থেকে শাকিব (১৯) নামে একজন ইজিবাইকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছিনতাইকারীরা শ্বাসরোধে তাকে হত্যার পর তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। শাকিব গোগা গ্রামের শাকিল উদ্দিনের ছেলে।
২০২৩ সালের ১০ জুন সদর উপজেলার নতুনহাট পাবলিক কলেজের পাশের একটি পাটক্ষেত থেকে বুলবুল হোসেন নামে একজন ইজিবাইকচালকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর দুই দিন আগে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি। বুলবুল হোসেন রাজারহাট এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। পরে পুলিশ জানতে পারে, ভাড়ায় ইজিবাইক নিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা। ইট দিয়ে আঘাত করে মুখমন্ডল বিকৃত করে দেওয়া হয়। হত্যার পর ছিনতাইকারীরা তার ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয়।
মার্চে নওয়াপাড়া পৌরসভার ধোপাদীতে খুন হন ইজিবাইকচালক রাশেদ উদ্দিন (৩০)। পুলিশ সেখানকার একটি মাছের ঘের থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। রাশেদ ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী মঠবাড়ি গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ওই মাছের ঘেরে ফেলে দেয়। এরপর দুর্বৃত্তরা তার ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয়।
একই বছরের অক্টোবরে শার্শা উপজেলার খড়িয়াডাঙ্গা গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে সজীব গাজী (১৯) নামে একজন ইজিবাইকচালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুুলিশ। দুর্বৃত্তরা তাকে গলা কেটে হত্যার পর তার ইজিবাইক নিয়ে যায়। পরে ডিবি পুলিশ হত্যার সাথে জড়িতদের আটক এবং ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে চৌগাছা উপজেলার ছানচাডাঙ্গা গ্রামে খুন হন ইজিবাইকচালক শুকুর আলী। তিনি উপজেলার আশাসিংড়া পুকুরিয়া গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে। ছিনতাইকারীরা তাকে হত্যার পর তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রাম থেকে ইজিবাইকচালক আল-আমিন মোল্লার (২২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের দুই দিন আগে মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমাখালী থেকে ৩ জন যাত্রী নিয়ে বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়ায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। পরে পুলিশ জানতে পারে, যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা তাকে হত্যার পর ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। নিহত আল-আমিন মোল্লা শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।
একই বছরের নভেম্বরে সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের পেছন থেকে পুলিশ আব্দুল্লাহ (১৯) নামে একজন ইজিবাইকচালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আব্দুল্লাহ সুলতানপুর গ্রামের মুজাহিদ হোসেনের ছেলে। দুর্বৃত্তরা তাকে গলা কেটে হত্যার পর তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। অবশ্য পরে পুলিশ ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার এবং জড়িত দুই দুর্বৃত্তকে আটক করে।
সর্বশেষ গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দুই ছিনতাইকারী মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়ায় চালক ইয়াছিনকে ছুরিকাঘাতে জখম করে তার ইজিবাইক নিয়ে যায়। যশোর শহর থেকে ইজিবাইক ভাড়া করে মণিরামপুরের খেদাপাড়ায় নিয়ে চালককে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। পরে তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। ইয়াছিন সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীবেশে দুর্বৃত্তরা ইজিবাইক ভাড়া করে চালককে তাদের সুবিধামত জায়গায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে। এরপর তারা তার ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দিচ্ছে। এ ধরনের অধিকাংশ ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।