রফিকুল ইসলাম রনি
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তৃণমূল ঢেলে সাজাতে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই আট বিভাগের জন্য আটটি টিম গঠন করে দিয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মাঠে যাওয়া শুরু করেছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা সম্মেলন করার তাগাদা দিচ্ছেন। ঈদের পরই পুরো কাজ শুরু হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূলের সম্মেলনের মাধ্যমে দলের নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির পাশাপাশি “অনুপ্রবেশকারী” থাকলে তাদের দল থেকে বাদ দেওয়া হবে।’
দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, জুলাই ও সেপ্টেম্বরে তৃণমূল সম্মেলনের পাশাপাশি বর্ধিত সভা, কর্মিসভা, জেলা-উপজেলা ঢেলে সাজাতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হবে। আগস্টজুড়ে শোকের কর্মসূচি থাকায় ওই মাসে কোনো সম্মেলন হবে না। তবে সারা দেশে শোকাবহ আগস্ট গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হবে। আগস্টে সিরিজ কর্মসূচি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা-উপজেলায় থাকবেন।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘উপজেলা-জেলা সম্মেলন এবং তৃণমূলে যাওয়ার জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা মাঠ পর্যায়ে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ঈদের পর কাজ শুরু করব। এর মধ্যে সংগঠন যেমন চাঙা হবে, তেমন স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপশক্তি যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়া হবে।’
দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন অথবা নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগও নেওয়া হবে দলের পক্ষ থেকে। আর যেসব সংগঠনের সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি, সেগুলোতেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে এখনই শক্তিশালী সংগঠকে তৈরি করা হবে। আগামী বছরের শুরুতেই দেশজুড়ে পৌরসভা নির্বাচন শুরু হবে। সে কারণে ওই সময় সম্মেলন করা সম্ভব হবে না। আগামী ডিসেম্বরে একটি বিশেষ বর্ধিত সভা গণভবনে হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিদেরও ডাকা হবে ওই বর্ধিত সভায়। দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমেও গতিশীলতা আনার প্রচেষ্টা নেওয়া হবে বর্ধিত সভা থেকে। ২০২৩ সালে ঢাকায় বর্ধিত সভার মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্যপদ নবায়ন অভিযান নতুন করে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু এতে খুব বেশি ফল আসেনি। সব মিলিয়ে চলতি বছরেই দল শক্তিশালী করার সব পরিকল্পনা গুছিয়ে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি একাধিক অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে দলের জাতীয় কাউন্সিল হবে। ওই কাউন্সিলের জন্য এখনই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী দিনে এ প্রস্তুতি এগিয়ে নিতে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।