-
- নিজস্ব প্রতিবেদক
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার বাঁধভাঙা ঢল। চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে গণস্রোত (ডানে উপরে); রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবরোধ (ডানে নিচে) : নয়া দিগন্ত –
ঢাবি প্রতিনিধি জানায়, রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জনসমুদ্র থেকে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষ হত্যার দায়ে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠনের দাবিও তোলা হয়। সরকারের সংলাপের আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা বলেন, বিজয় সুনিশ্চিত, আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। গতকাল বিকেলে শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এক দফার দাবিতে আজ রোববার থেকে সারা দেশে সর্বাত্মক অসহযোগ শুরু হবে।
এর আগে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছাত্র-জনতার ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় একত্র হন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এ যেন এক অন্য রকম দৃশ্য। চার দিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। কোথাও এতটুকু জায়গা ফাঁকা নেই। এক দিকে জগন্নাথ হল, অন্য দিকে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার, আরেক দিকে দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে গেছে জনতার ঢল। তার পরও থামেনি জনস্রোত। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারের দিকে মানুষের আগমন চলমান ছিল। শহীদ মিনার পেরিয়ে পাশের সড়কগুলোতেও অবস্থান নেন আগতরা। সন্ধ্যা পর্যন্তও বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা আসছিলেন। এতে সরকার পতনের সেøাগানে উত্তাল ছিল শহীদ মিনার এলাকা।গতকাল দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। এ সময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে শহীদ মিনার। পরে বেলা ৩টার দিকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে। সেখানে উপস্থিত সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাথায় ও হাতে ছিল দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
শহীদ মিনারে কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে থেকে আন্দোলনকারীদের একাংশ শহীদ মিনার এলাকা ছাড়তে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ শহীদ মিনার থেকে টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। আরেকটি অংশ শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকেন। পরে শাহবাগ মোড়ের সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারী। রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শাহবাগে বিক্ষোভ করছিলেন। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজারো মানুষ অবস্থান করেন। রাজু ভাস্কর্যেও বিক্ষোভ চলে।
সমাবেশে স্লোগান চলে, দফা এক, দাবি এক-শেখ হাসিনার পদত্যাগ ৯ দফা বাদ দে, এক দফার ডাক দে, রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়, আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না, আবু সাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না, জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে, দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইত্যাদি।শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার সময় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে। এ সময় তিনি রবিবার থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, যত দিন পর্যন্ত আমাদের এই এক দফা বাস্তবায়ন না হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত আপনারা যেসব জরুরি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেগুলো পালন করবেন। বিজয় নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে উল্লেখ করেন তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশে এখন পর্যন্ত ২১৬ জনেরও বেশি আন্দোলনকারী এবং শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের দাবি এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্য ও সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ এবং তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় এসব আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি করে তিনি।
৭ নির্দেশনা : সরকারের পদত্যাগ চেয়ে অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে ৭ নির্দেশনা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এগুলো হলো- ১. ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হবে যেখানে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। এমন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করা হবে যাতে বাংলাদেশে আর কখনোই স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে; ২. অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন ৩. পাশাপাশি রোববার সব জেলা, উপজেলা, পাড়ায়, মহল্লায় বিক্ষোভ ও গণ-অবস্থান কর্মসূচি; ৪) সব খুনের বিচার এবং সব রাজবন্দীকে মুক্ত করা হবে; ৫. সব ক্যাম্পাস ও হল খুলে দেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম। এর মধ্যে হল খোলা না হলে শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্ব হল খুলে প্রবেশ করবে; ৬. সর্বস্তরের নাগরিক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে শিগগিরই ক্ষমতা হস্তান্তরের জাতীয় রূপরেখা হাজির করা হবে; ৭. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের নাগরিকদের নিয়ে জাতীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হবে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে রওনা হন। বেলা ৩টার দিকে সায়েন্স ল্যাব থেকে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় উপস্থিত হন।
প্রগতি সরণি এলাকায় অবরোধ : বেলা সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হুট করে তারা প্রধান সড়কে নেমে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হন এই বিক্ষোভ সমাবেশে। প্রগতি সরণি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা গেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। পরে তারা বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিলে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।সায়েন্স ল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা : দুপুর ১২টা থেকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ বিক্ষোভে সময়ের সাথে সাথে নামতে দেখা যায় জনতার ঢল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এ আন্দোলনে সংহতি জানান পথচারী, ছোট বড় ব্যবসায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী থেকে শুরু করে রিকশাচালকরা। আন্দোলন ঘিরে পুরো সায়েন্স ল্যাব এলাকার সড়ক আন্দোলনকারীদের অবস্থানে বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা সিটি কলেজের সামনে পুলিশের র্যারিকেড নিয়ে নিজেরাই রাস্তা বন্ধ করে দেন। এরপর পুরো নীলক্ষেত পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে ফুট ওভারব্রিজের উপরে টানিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। এই এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তারা ছিলেন নীরব। যার কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উল্টো বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের পুলিশদের পানি-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করতে দেখা গেছে। শুরুতে পুলিশ বিস্কুট-পানি নিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে তা গ্রহণ করে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, পুলিশ আমাদের শত্রু না। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা অনেকটা সময় আমাদের পাশে অবস্থান করছেন, আমরা সাধ্যমতো তাদের মাঝে পানি ও বিস্কুট পাঠিয়েছি। তারা (পুলিশ) গ্রহণ করেছেন তাই আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে সত্যের পক্ষে অবস্থান নেয়ারও অনুরোধ জানাই। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস/ দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেবো রক্ত/ স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে/জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো/আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে/আমার ভাই শহীদ কেন, অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন/আমাদের আন্দোলন চলছে-চলবে।যাত্রাবাড়ী : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর কাজলা ও শনির আখড়া অংশে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। শনিবার দুপুর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন। ফলে ঢাকা অভিমুখী সব প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তবে দেখা যায়নি পুলিশের সেই মারমুখী আচরণ। পুলিশ নীরব থাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।মিরপুর : কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতায় নিহত, গণগ্রেফতারের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবি আদায়ে মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জনতা। শনিবার দুপুর ১টার পর থেকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে। তারা প্রধান সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা সম্মিলিতভাবে জাতীয়সঙ্গীত গেয়ে আনুষ্ঠানিক বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে বেলা দেড়টা থেকে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকাসহ প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সরেজমিন দেখা যায়, আন্দোলনকারীদের থেকে কয়েক মিটার দূরে মিরপুর-২-এর দিকে পুলিশ অবস্থান নেয়। পরে মিরপুর জোনের ডিসি, এডিসি, ওসিসহ অনান্য পুলিশ কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের কাছে ডেকে কথা বলেন। তারা আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিতে বলেন। কোনো বহিরাগত এসে যেন কোনো ধরনের সহিংসতা করতে না পারে সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেন।
মহাখালী ও মিরপুর ডিওএইচএসে বিক্ষোভ : মহাখালী ও মিরপুর ডিওএইচএসে মিছিল-বিক্ষোভে অংশ নেন ছাত্র ও জনতা। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে ডিওএইচএসের মধ্যে বিক্ষোভে অংশ নেন কয়েক শত শ’ মানুষ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে মহাখালী ও মিরপুর ডিওএইচএসের ভেতরে বিক্ষোভ হয়েছে। মহাখালী ডিওএইচএসে বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল ৫টার পর ডিওএইচএসের মধ্যে বিক্ষোভে অংশ নেন সেখানে বসবাসরত কয়েক শ’ মানুষ। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। ডিওএইচএসে মূলত সশস্ত্রবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা বসবাস করেন। কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন বলেও জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান।
বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে কয়েক শ’ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছিলেন। দুপুর ১২টার পর হাজারো শিক্ষার্থীর ঢল নামে। একেকটি মিছিলে হাজার হাজার শিক্ষার্থী আসতে থাকে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সময়ে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দখলে। এ ছাড়া আরো দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন অভিভাবকরাও। অভিভাবকরাও দলে দলে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
ট্রাফিক পুলিশ প্রত্যাহার : শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর একাধিক এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। ঢাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: মুনিবুর রহমান জানান, সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে কিছু এলাকায় এখনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ডিএমপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ৬৯টি পুলিশ বক্স ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, দু’টি উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কার্যালয়, চারটি সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কার্যালয়, দু’টি পুলিশ ফাঁড়ি ও তিনটি থানায় হামলা চালানো হয়েছে।