শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি :সুবির কুমার,,,
খোল, করতাল, হারমোনিয়াম, বেহালা আর বাঁশির সুমধুর সুর। এসব বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে গাওয়া হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণর নামকীর্ত্তন। এখানে আসা হাজারো ভক্তরাবৃন্দ একাগ্রচিত্তে শুনছেন, এই মহানাম কীর্ত্তন।
বিশ্বের সকল প্রাণীর শান্তি ও মানব কল্যান কামনায় মাগুরার শালিখায় উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম প্রাঙ্গণে (বুড়ির বাড়ী) ৭২তম বার্ষিকী ৩দিন ২৪ প্রহর ব্যাপী অখন্ড এ নামযজ্ঞার আয়োজন করা হয়েছে।
আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৯৫৩ সাল থেকে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় শুরু হয়ে প্রতি বছর এই মহানাম যজ্ঞা অনুষ্ঠানটি হয়ে আসছে।
এ বছর রবিবার (১লা জুন) মঙ্গল ঘট স্থাপন, প্রদীপ প্রজ্জলন, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা, তৎপর শ্রী শ্রী মহানামযজ্ঞের শুভ অধিবাস। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) নাম সমাপনান্তে কুঞ্জভঙ্গ, নগর কীর্তন, মধ্যাহ্নে শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর ভোগ আরাধনা, ভোগ দর্শন ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হবে।
এতে মহানাম সুধা পরিবেশন করছেন রাজবাড়ী পাংশা থেকে আগত যোগমায়া সম্প্রদায়, গোপালগঞ্জের প্রভুজী সম্প্রদায়, ঢাকা মানিকগঞ্জের যুগোল কিশোর সম্প্রদায়, সাতক্ষীরা আদি গৌরাঙ্গ সম্প্রদায়, যশোর রাম মন্দির সম্প্রদায়, শতখালী, বাগডাঙ্গা রাধা গোবিন্দ সম্প্রদায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাগডাঙ্গা রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম মাঠ প্রাঙ্গণ সুবিশাল প্যান্ডেলে সনামধন্য কীর্ত্তনীয়া সম্প্রদায়ের একটি দল নাম কীর্ত্তন পরিবেশন করছেন। ভক্তিভরে মাঠে উপস্থিত হাজারো কৃষ্ণ ভক্তরা নাম কীর্ত্তন শ্রবণ করছেন।
আর এ নামযজ্ঞা অনুষ্ঠানকে ঘিরে বসছে মেলা। মেলায় নাগরদোলাসহ বিভিন্ন খাবার ও ছোট ছোট দোকান গুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ছোট বড় নানা বয়সী লোকের সমাগম ছিল এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে।
কুয়াতপুর থেকে আসা ষাটোর্ধ অশোক ঘোষ বলেন, পাপাচার থেকে মানুষের মুক্তির একমাত্র পথই হচ্ছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম শ্রবন করা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম শ্রবন করলে ইহকাল ও পরকালে মুক্তি পাওয়া যায়।
অশোক ঘোষের মত এই কীর্ত্তন শুনতে আসা বাসুদেব বিশ্বাস বলেন, আমি প্রতিবছর এখানে নাম কীর্ত্তন শুনতে আসি। এখানে এসে আমার মন খুব আনন্দিত হয়ে উঠেছে। যতদিন ঠাকুর বাঁচিয়ে রাখে, ততোদিন যেন তার এই নাম শুনে যেতে পারি।
বাগডাঙ্গা রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম কমিটির সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের কল্যাণ ও শান্তি কামনায় প্রতি বছর আমাদের এই নাম কীর্ত্তনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। দূর দূরান্ত থেকে এখানে বহু ভক্তবৃন্দ হরিনাম শুনতে আসে। এখানে আগত সকল ভক্তবৃন্দের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়।