মাগুরা প্রতিনিধি : শালিখা আড়পাড়া খাদ্য গুদামে মোঃ শফিকুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে ১০ এপ্রিল ২০২১ সালে। তার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকেই সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট নানা অনিয়মের প্রস্তাব দিতে থাকে। তাদের অনিয়ম করার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে তাদের সাথে শফিকের বিরোধিতা সৃষ্টি হয়। সিন্ডিকেটের কর্ণধর হাজী সবুর হোসেন শালিখা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরীর কাছে থেকে অবৈধভাবে চালকলের লাইসেন্স নিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা পরিচালনা করতো। আড়পাড়া খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী সুবাস চন্দ্র সরকার ও লেবার সর্দ্দার বিপুল বিশ্বাস, হাজী সবুরের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাই শফিক। তখন সুবাস ও বিপুলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করে শফিক। তার প্রেক্ষিতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাগুরা, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক খুলনা বিভাগ খুলনাকে অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহোদয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়ে ছিলো জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ঝিনাইদহকে। তদন্তে সুবাস চন্দ্র সরকার দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহোদয় তাকে প্রশাসনিক বদলী করে দেয় কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে। বর্তমানে সুবাস হালসা খাদ্য গুদামে স্থায়ী পদায়ন দিয়ে সংযুক্তিতে খোকসা খাদ্য গুদামে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। জানা যায় সুবাস চন্দ্র সরকার ২০১৭ সাল থেকে আড়পাড়া খাদ্য গুদামে কর্মরত ছিলো। বহুদিন এখানে চাকুরী করার সুবাদে একক আধিপত্য বিস্তার করে, হাজী সবুর এর সহযোগিতায় নিরাপত্তা প্রহরী সুবাস চন্দ্র নানারকম অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। তিনি অনিয়ম করে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ও তার নিজ বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার সাধুখালী গ্রামে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করেছে। এই বাড়ি তৈরির আসল রহস্য সুষ্ঠু অনুসন্ধান মূলক তদন্ত করলেই এটার বিস্তারিত তথ্য উদঘাটিত হবে। আড়পাড়া খাদ্য গুদাম হতে যখন চালের ঘাটতি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকে এগুলো তখন থেকেই বিভিন্ন রকমভাবে ঘটনা বেরিয়ে আসতে থাকে। ওসিএলএসডির সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে সুবাস চন্দ্র সরকার হাস্কিং রাইস মিলের প্রতিনিধিত্বকারী চাল ব্যবসায়ী হাজী সবুর হোসেন, এসবি রাইস মিলের ম্যানেজার সুব্রত, ধান ব্যবসায়ী কালা চাঁদ, সাইফুল ইসলাম, মোজাহার বিশ্বাস সহ সকল ব্যক্তির সাথে সুবাস চন্দ্রর নানারকম কৌশলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতো বলে জানা যায়। সিন্ডিকেটের ক্ষমতা বলে আড়পাড়া খাদ্য গুদামের পূর্বের সকল ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তার সাথেই এরকমভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হতো। মোট কথা এই সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট নিরাপত্তা প্রহরীদের হাত করে নানা অনিয়ম করে আসতো। যখনই কর্মকর্তাগণ এটি টের পেয়ে যেতো তখনই সিন্ডিকেট যে কোন ভাবে তাকে ব্লাকমেইল করে কঠিন বিপদে ফেলে দিতো। সুবাস চন্দ্র সরকার সকল কর্মকর্তার বিশ্বাসী সেজে সবার ক্ষতিসাধন করতো বলে জানা যায়। সুবাস চন্দ্র সরকার যখন সরোজগঞ্জ খাদ্য গুদামে চাকুরী করতো সেখানে মীর আব্দুল আলীম ছিলো ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সেখান থেকে জানা যায় সে ঐ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারও বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। সেখান থেকে বদলী নিয়ে আসে কুষ্টিয়া জেলার মধ্যে মিরপুর খাদ্য গুদামে তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলো মোঃ নজরুল ইসলাম। নজরুল ইসলামকে এমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে সুবাস চন্দ্র সরকার তার ফলশ্রুতিতে তিনি এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। সেই নজরুলের পরিবার আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। একই ভাবে শালিখা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকেও এই দূর্নীতিবাজ দূরন্তর চালাক সুবাস চন্দ্র সরকার সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে চাল গায়েব করে ওসিএলএসডিকে চরম বিপদের মধ্যে জড়িয়ে দিয়েছে। দুই-একজন অসাধু নিরাপত্তা প্রহরীর কারণে আজ বাংলাদেশ খাদ্য বিভাগ হুমকির মুখে পড়তে বসেছে। সুবাস চন্দ্র সরকার বড় কর্মকর্তাদের দিয়ে ফোন দিয়ে তাকে দেখেশুনে রাখার জন্য সুপারিশ করাতো। সেই সুযোগে সে বিভিন্ন রকম ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিত।