বিদেশে অবস্থানরত বাঙালি কর্মজীবী মানুষের কঠোর পরিশ্রমের ফসল রেমিট্যান্স। বিগত কয়েক বছরে দেশের রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তাই আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসী বাঙালিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর কোনো ভ্যাট বসানো হয়নি।
৭ জুন বাজেট ঘোষণার পর থেকেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে যে, রেমিট্যান্সের ওপর এবারের বাজেটে ভ্যাট বসানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, ১২ হাজার টাকার বেশি পাঠালেই ভ্যাট দিতে হবে। বিভিন্ন মহল থেকে এর সমালোচনাও হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। পুরো বিষয়টি একটি চক্রান্ত। ঈদকে সামনে রেখে একটি মহল এ ধরনের প্রচার শুরু করে যাতে প্রবাসীরা অবৈধ পন্থায় টাকা পাঠান।
ভ্যাট আরোপ হয় পণ্য ও সেবা সরবরাহের ওপর। বাংলাদেশের প্রবাসী দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের বিনিময়ে যে সেবা দিয়ে থাকেন, এর বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। এই কার্যক্রম ১৯৯১ সালের মূল্য সংযোজন কর আইনের ৩ নম্বর ধারার ২ এর ‘ক’ নম্বর উপধারা অনুযায়ী, সেবা রপ্তানি হিসেবে বিবেচিত। তাই এই রপ্তানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিট্যান্স যা-ই আসুক না কেন, এই খাতের ওপর ভ্যাট বসবে না। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স প্রেরণ করতে পারেন।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর কর দিতে হবে এমন গুজব ছড়িয়ে একটি চক্র দেশের রেমিট্যান্সের প্রবাহ কম করতে চাইছিলো। কিন্তু দ্রুত প্রেস বিজ্ঞপ্তি ডেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদান করে। তাই প্রবাসীদের সচেতন হতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন কুচক্রী গোষ্ঠী নতুন কোন পন্থা অবলম্বন করে তাদেরকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।