মামলা, কারাবাস ও জনসমর্থনের মিশেলে একজন আলী আহমেদ: মাগুরা-১ আসনে কেন তিনি ‘অবিসংবাদি’
— ৩০ মামলা ও ২৫ বারের কারাবরণকৃত নেতার স্বপ্ন, মাগুরাকে আধুনিক মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলা
ফারুক আহমেদ, মাগুরা : মাগুরা জেলা বিএনপির দীর্ঘদিনের কাণ্ডারি ও বর্তমান আহ্বায়ক আলী আহমেদ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনের অন্যতম হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন আলোচনায়। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন জনসমর্থন, সাফল্য এবং একই সঙ্গে চরম রাজনৈতিক নিপীড়নের এক বিরল দৃষ্টান্ত।
মুক্তিযোদ্ধা ও তিনবারের ইউপি চেয়ারম্যানের সন্তান আলী আহমেদ নিজেও ৬নং রাঘবদাইড় ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি মাগুরা জেলার সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এবং জনগণের সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক দুইবার ‘মাগুরা জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান’ হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন।
আলী আহমেদের সাংগঠনিক দক্ষতা তাকে মাগুরা জেলার রাজনীতিতে দ্রুত উত্থান এনে দেয়। ১৯৮৮ সালে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকেই তিনি জেলা বিএনপির একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আসীন হতে থাকেন। তবে, মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, দুইবারের সাধারণ সম্পাদক, সদস্য সচিব ও বর্তমানে দ্বিতীয়বারের মতো আহ্বায়কের দায়িত্ব পালনকারী এই নেতাকে রাজনৈতিক কারণে চরম মূল্য দিতে হয়েছে বারবার। গত ১৭ বছরে তিনি ৩০টিরও অধিক মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন এবং ১০ বারেরও অধিকবার কারাবরণ করেছেন, যেখানে তার জীবনের প্রায় ৩ বছর কেটেছে কারাগারে। জানা যায়, ১/১১-এর (ওয়ান-ইলেভেন) সময় তিনি টানা ১৬ মাস কারাবন্দি ছিলেন এবং সেসময় রিমান্ডে তাকে কঠোর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এমনকি ২০১৫ সালে তাকে বাড়িতে না পেয়ে পুলিশ তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
অসংখ্য দমন-পীড়নের পরেও রাজনীতিতে অটল থাকা এই নেতা এবার মানুষের সেবা করতে চান সংসদ সদস্য হিসেবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এবারের নির্বাচনে তিনি মাগুরা-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। মাগুরাকে তিনি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন মডেল জেলা গঠন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এমপি নির্বাচিত হলে তার প্রধান লক্ষ্য থাকবে মাগুরা জেলার বেকারত্ব নিরসন, তরুণ সমাজকে বাঁচাতে মাদকমুক্ত সমাজ গঠন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।
উক্ত আসনের সাধারণ জনগণ মনে করেন, স্থানীয় পর্যায়ে বারবার জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার পরীক্ষিত সাফল্য এবং চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও রাজনীতিতে টিকে থাকার দৃঢ়তা, তাকে এই আসনে এক অনিবার্য এবং নিঃসন্দেহে দলের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।