• Thu. Apr 25th, 2024

Basic News24.com

আমরা সত্য প্রকাশে আপোষহীন

মাগুরার মহম্মদপুর নূর মহম্মদের প্রতিক্ষায় রয়েছে তিন সন্তান

Bybasicnews

Oct 16, 2022

 হাতে টাকা জমলেই বাড়ি ফিরে তিন ছেলে মেয়েকে মেলায় নিয়ে যাবেন এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেলেন নূর মহম্মদ। একে একে বাড়ির পাশে আরো ৪ জনের লাশ ফিরেছে। সকালে ওই লাশের বহরে বারবার উঁকি দিয়েও বাবাকে খুঁজে পায়নি নূর মহম্মদের বড় ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আরমান। এখন তার প্রতিক্ষা যদি ফিরে আসে বাবা! নিয়ে যাবেন তাদের মহম্মদপুরের মেলায়।

বুধবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় পাথর বোঝাই এমভি সুলতান সানজা জাহাজটি ডুবে যায়। ওই জাহাজে ছিলেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মন্ডলগাতি গ্রামের নূর মহম্মদ (৪০) ছাড়াও একই গ্রামের নুরোল হোসেনের ছেলে জাহাজের মাস্টার শিমুল (৪০) ও সুকানী জাহিদ (২৩), কামাল হোসেনের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৫) ও রবিউল ইসলাম (২২), খসরু বিশ^াসের ছেলে সুরুজ (১৯), দাতিয়াদহ গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে নাজমুল (৩০) এবং যশোবন্তপুর গ্রামের লুলু মিয়ার ছেলে রুবেল (৩০)।

দূর্ঘটনার সময় রুবেল এবং রবিউল পানিতে লাফিয়ে অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় কুলে ফিরে আসেন। শুক্রবার কোস্টগার্ড এবং উদ্ধারকারী দল সেখানে অভিযান চালিয়ে শিমুল, মনির, সুরুজ এবং নাজমুলের মৃতদেহ উদ্ধারের পর মাগুরায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। কিন্তু এখনও নিখোঁজ রয়েছেন নূর মহম্মদ এবং জাহিদ।

শনিবার সকালে লাশবাহি পরিবহনে করে মৃতদেহগুলো পৌঁছনোর পর স্বজনদের আহাজারিতে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার তিনগ্রামের মানুষের মধ্যে হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়। পরে মন্ডলগাতি কবরস্থানে শিমুল (৪০), মনির (২৫) এবং সুরুজের লাশ পাশাপাশি এবং নাজমুলের লাশ দাতিয়াদহ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দূর্ঘটনায় এমভি সুলতান সানজা’র মাস্টার শিমুলের লাশটি পাওয়া গেলেও ছোট ভাই একই জাহাজের সুকানী জিহাদের লাশটির সন্ধ্যান না মেলায় পরিবারের লোকজন তার ফিরে আসার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে বাবা হয়তো ফিরে আসবেন এমন আশায় বুক বেধে আছে নূর মহম্মদের ছোট ছোট তিন সন্তান আরমান (১৫), শাপলা (১৩) এবং রিয়াদ (১০)।

স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরমান জানায়, এবারের ঈদের পর তার বাবা জাহাজে চলে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার বাড়ির পাশে ঝামা বাজারে মেলা হয়েছে। সেই মেলায় যাবার জন্যে বাবার কাছে মোবাইলে টাকা চাইলে দিতে পারেন নি। বাবা জানিয়েছিলেন, এবার বেতন পেয়েই বাড়ি ফিরবেন, তিন ভাইবোনকে নিয়ে যাবেন মহম্মদপুরের মেলায়।

“কিন্তু আব্বা না ফিরলে মেলায় যাবো কীভাবে? সত্যিই কি ফিরবেন। কে দেখবে আমাদের?”-আরমানের এমন খেদোক্তিকে সেখানকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তাদের ব্যাথায় ঢুকরে কেঁদে ওঠেন অনেকেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *